দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা অর্থাৎ প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবার সমূহ কি কি সেগুলো আমাদের জানতে হবে। এবং সেই তালিকা অনুযায়ী আমাদের খাবার খাওয়া উচিত। তাহলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ্য থাকবে।
আজকের এই পোস্টটিতে আপনারা জানতে পারবেন দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা সম্পর্কে এবং যেসব খাবারে পুষ্টি বেশি সেই সব খাবার সম্পর্কে। তাছাড়া আরও অনেক তথ্য তুলে ধরবো এই পোষ্টটিতে।
সুচিপত্রঃ যেসব খাবারে পুষ্টি বেশি
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা
একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যাক্তির দৈনিক সুষম খাদ্য তালিকা
বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা
১৮ বছরের খাদ্য তালিকা
তিন বেলার খাবার তালিকা
প্রতিদিনের সুষম খাদ্য তালিকা
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
অতিরিক্ত পুষ্টি আমাদের দেহে যে ক্ষতি করে
বেশি পুষ্টিকর সবজি কোনটি
শেষ কথা
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকাঃ
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা যেসব রয়েছে অর্থাৎ প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবার সমূহ যেগুলো আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী। এইসব খাবার মেনে খেলে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য উভয়ই ভালো থাকে। আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা মেনে খাওয়া উচিত। প্রতিদিন যেসব খাবার খাওয়া দরকার এই নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
কালের নাস্তায়ঃ
ওটমিলঃ এটি ফাইবারের জন্য একটি ভালো উৎস। যা অনেক দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে তৃপ্তি রাখতে সহায়তা করে এবং হজম কাজেও সাহায্য করে থাকে।
ফলমূলঃ কলা বা আপন হলো ভিটামিন মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট এর সমৃদ্ধ ফল। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারীতা বহন করে।
ডিমঃ প্রোটিনের জন্য চমৎকার একটি উৎস হলো ডিম। যা আমাদের পেশি গঠনে সাহায্য করে থাকে এবং মনোযোগ বাড়িয়ে থাকে।
দুপুরের খাবারেঃ
ব্রাউন রাইসঃ এটি সম্পূর্ণ শস্য জাতীয় খাবার। ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল এর ভালো উৎস হচ্ছে এই শস্য।
মাছ বা মুরগির তরকারিঃ মুরগি ও মাছে উভয়েই প্রোটিন বিদ্যমান। এবং মাছের ক্ষেত্রে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও বিদ্যমান। যা আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান সমূহ।
শাক সবজিঃ পালং শাক ও ব্রোকলি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।
বিকেলের নাস্তায়ঃ
মিশ্র বাদামঃ কাঠবাদাম এবং আখরোট স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে, যা আমাদের শরীরে শক্তি বাড়িয়ে থাকে।
এক কাপ দইঃ এটি প্রোবায়োটিক, যা হজম কাজে সাহায্য করে থাকে এবং শরীরের জন্য ভালো একটি খাবার।
রাতের খাবারঃ
মসুর ডালঃ এটি ভেজিটেবল প্রোটিনের জন্য একটি ভালো উৎস হিসেবে ধরা হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে।
সবজি রান্নাঃ কুমড়া বা শিমে ভিটামিন এবং মিনারেলের পাশাপাশি ফাইবারও রয়েছে, যা পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে থাকে।
রুটিঃ পূর্ণ গমের রুটি আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্ত রেখে থাকে এবং এনার্জি প্রদান করে থাকে।
একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক সুষম খাদ্য তালিকা
একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক সুষম খাদ্য তালিকা আমাদের জেনে রাখতে হবে। তাহলে আমাদের অর্থাৎ কোনো পূর্ণবয়স্ক বা প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দেহের জন্য অনেক উপকারে আসবে। কোনো পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জন্য জেনে রাখা উচিত যে, সে যেই খাবারই খাবে সেই খাবারটি যেন সে পরিমাণ মতো এবং নিয়ম অনুযায়ী খায়। সেটি সুষম, আমিষ, শর্করা ও স্নেহ জাতীয় হোক না কেন নিয়ম মতো খেতে হবে।
সকালের নাস্তাতেঃ
ওটস বা পোলাওঃ ফাইবার এবং কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ হচ্ছে এই অটস বা পোলাও। যা শক্তি প্রদান করে থাকে এবং দীর্ঘ সময় তৃপ্তি রাখতে সাহায্য করে থাকে।
দুধঃ দুধ প্রোটিন, স্বাস্থ্য এবং পেশি গঠনের সহায়তা করে থাকে।
ফল মূলঃ ভিটামিন মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট এর ভালো উৎস হলো ফলমূল। কলা পটাশিয়াম সরবরাহ করে যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার করে থাকে।
বাদামঃ বাদাম হলো স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন এবং ফাইবারের ভালো উৎস। যা শক্তি বাড়ায় এবং মেটাবলিজম উন্নত করে থাকে।
দুপুরের খাবারঃ
ব্রাউন রাইস বা পূর্ণ গমের রুটিঃ কমপ্লেক্স ও ফাইবার সরবরাহ করে থাকে এই দুইটি খাবার । যা দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি প্রদান করে থাকে।
মুরগীর বা মাছের তরকারিঃ উচ্চ মানের প্রোটিনের উৎস যা পেশী গঠনে এবং শরীরের সঠিক কাজকর্মে সহায়তা করে থাকে।
সবজিঃ পালং শাক বা ব্রোকলি ভিটামিন এবং মিনারেল, যেমন ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম এর ভালো উৎস যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ডালঃ মসুর ডাল যা ভেজিটেবল প্রোটিনের একটি ভালো উৎস হিসেবে ধরা যায়। যা হৃদয় এর স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং হজমে সহায়তা করে থাকে।
রাতের খাবারঃ
পূর্ণ গমের রুটিঃ রুটি স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট এর উৎস যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি প্রদান করে থাকে।
সবজি রান্নাঃ কুমড়া বা গাজর ভিটামিন এ এবং অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে যার চোখের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারিতা বহন করে।
স্যালাডঃ শসা, গাজর, টমেটো সবজি স্যালাডে ভিটামিন এবং মিনারেল থেকে থাকে যা আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান।
বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা
বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা, প্রিয় পাঠক আমাদের জেনে রাখতে হবে বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা সমূহ। যেসব খাবারে পুষ্টি বেশি সেই খাবারের তালিকা গুলো আমাদের বয়স অনুযায়ী খেতে হবে। এখানে এই খাবার গুলো খাওয়ার সময় পরিমাণ টা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বয়সের তুলনায় কোনো খাবার বেশি খেয়ে নিলে তা আমাদের দেহের বা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর দিক বয়ে আনতে পারে। নিচে তালিকা সমূহ দেওয়া হলো-
শিশু (১ থেকে ৫ বছর) --
সকালের নাস্তাঃ সকালের নাস্তায় এদের দুধ ও ওটস ফলের পিউরি খাওয়াতে হবে।
দুপুরের খাবারেঃ এদের ছোট রুটি বা পাস্তা, মুরগির তরকারি এবং সবজি খাওয়াতে হবে।
বিকেলের নাস্তাতেঃ ১ থেকে ৫ বছরের বাচ্চাকে দই বা ফলের স্যালাড খাওয়াতে হবে।
এবং রাতের বেলায়ঃ ভাত ডাল এবং ভাজা সবজি খাওয়াতে হবে।
কিশোর-কিশোরী (৬ থেকে ১২ বছর) --
সকালের নাস্তাঃ দুধ ও সিরিয়াল খেতে হবে এবং এক টুকরা ফল খেতে হবে।
দুপুরের খাবারঃ ভাত অথবা রুটি এর সাথে মাছ অথবা মাংস খেতে হবে এবং সবজি খেতে হবে।
বিকালের নাস্তাঃ বাদাম অথবা স্যান্ডউইচ খেলে অনেকটাই তৃপ্তি পাওয়া যায়।
রাতের খাবারঃ ডাল, রান্না করা সবজি, ভাত অথবা রুটি খেতে হবে।
তরুণ (১৩ থেকে ১৯ বছর) --
সকালের নাস্তাঃ স্মুদি বা ওটমিল আর ডিম খেতে হবে।
দুপুরের খাবারঃ ব্রাউন রাইস, চিকেন বা টোফু, সবজি খেতে হবে।
বিকেলের নাস্তাঃ ফলের সালাদ বা ইয়োগার্ট খেতে হবে।
রাতের খাবারঃ পূর্ণ গমের রুটি মাছের তরকারি ও সবজি খেতে হবে।
পূর্ণবয়স্ক (২০ থেকে ৪৯ বছর) --
সকালের নাস্তাঃ দুধ অথবা দই, ওটমিল ও ফল খেতে হবে।
দুপুরের খাবারঃ ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া, ডাল, মাছ অথবা মাংস এবং সবজি খেতে হবে।
বিকালের নাস্তাঃ বাদাম বা প্রোটিন বার খেতে হবে।
রাতের খাবারঃ রুটি মুরগির তরকারি ও সালাদ খেতে হবে।
বয়স্ক (৫০ বছর এবং তার উপরে) --
সকালের নাস্তাঃ দুধ অথবা দই, হালকা সিরিয়াল ও ওটস খেতে হবে।
দুপুরের খাবারঃ সবজি এবং ডাল, ব্রাউন রাইস (কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট) খেতে হবে।
বিকালের নাস্তাঃ ফল বা স্যালাড খেতে হবে।
রাতের খাবারঃ হালকা সবজি রান্না, ডাল এবং স্যুপ খেতে হবে।
পানিঃ প্রত্যেক বয়সের জন্যই পানি পান করতে হবে পরিমাণ মতো যা অনেক জরুরী। দিনে অন্তত দুই থেকে তিন লিটার
১৮ বছরের খাদ্য তালিকা
১৮ বছরের খাদ্য তালিকা, ১৮ বছর বয়সের তরুন-তরুনীদের যেসব খাদ্য তালিকা মেনে খাবার খাওয়ার উচিত তা অবশ্যয় জেনে নিতে হবে। এবং সেই অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। কোনো ১৮ বছরের ছেলে বা মেয়ে যদি সুষম খাদ্য বা যেকোনো খাবার যদি নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ার চেস্টা করে তাহলে তাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। ১৮ বছর বয়সে প্রতিদিন যেসব খাবার খাওয়া দরকার তার তালিকা দেওয়া হলো-
সকালের নাস্তা--
দুধ অথবা দই এক কাপ খেতে হবে।
ওটসঃ এক কাপ দুধ বা পানির সঙ্গে রান্না করে খেতে হবে।
ফলঃ একটি কলা বা একটি আপেল খেতে হবে।
ডিমঃ একটা থেকে দুইটা সিদ্ধ ডিম অথবা অমলেট খেতে হবে।
দুপুরের খাবার--
ব্রাউন রাইসঃ এক কাপ বা দুইটি পূর্ণ গমের রুটি খেতে হবে।
মাংস বা মাছঃ মুরগির তরকারি বা এক পিস মাছ খেতে হবে।
শাকসবজিঃ পালং শাক অথবা ব্রোকলি খেতে হবে।
স্যালাডঃ শসা, টমেটো, গাজর এর স্যালাড খেতে হবে।
বিকেলের নাস্তা--
বাদামঃ কাঠবাদাম বা আখরোট এক মুঠো ভর্তি করে খেতে হবে।
ফলের স্মুদীঃ এক কাপ পরিমাণ খেতে হবে।
রাতের খাবার--
রুটিঃ পূর্ণ গমের রুটি দুই থেকে তিনটি খেতে হবে।
ডালঃ মসুর বা ছোলার ডাল খেতে হবে।
রান্না সবজিঃ কুমড়ো বা শিম এর সবজি খেতে হবে।
স্যালাডঃ বিভিন্ন প্রকার মিশ্রিত সবজির স্যালাড খেতে হবে।
পানি--
দিনে অবশ্যই ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে।
তিন বেলার খাবার তালিকা
তিন বেলা খাবার তালিকা সম্পর্কে আমাদের অবশ্যয় জানতে হবে। আমরা উপরের কয়েকটি পয়েন্টে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছি এবং অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এখানে তালিকা গুলোর মধ্যে অনেক খাবারের তালিকায় মিল থাকতে পারে। সুতরাং প্রয়োজন অনুযায়ী আমার সেগুলো ফলো করবো। প্রতিদিন যেসব খাবার খাওয়া দরকার অর্থাৎ তিন বেলার খাবার তালিকা হলোঃ
এম এস আই 17 ব্লগ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url