তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি সেই বিষয় গুলো আমাদের সকলের জানতে হবে এবং জেনে রাখতে হবে। আজকের এই পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়লে তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

তিলের-তেলের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা বা তিলের তেলের ভালো ও খারাপ দিক সম্পর্কে জানতে পারলে, এটি ব্যবহার করতে আপনাদের অনেক সুবিধা হবে। আজকে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

সূচিপত্রঃ তিলের তেলের উপকার ও অপকার - তিলের তেলের ভালো ও খারাপ দিক

তিলের তেলের উপকারিতা

তিলের তেল যাকে অনেকে "Sesame Oil" থাকে। এই তিলের তেল আমাদের দেহের মধ্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা দিয়ে থাকে।  এবং এটি সাধারণত রান্নার সময়, ত্বকে ও চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই তেলের অনেক উপকারিতা রয়েছে, এবং এই তেলের অনেক গুনাগুন আছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি। এই তেলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলোঃ

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ তিলের তেলে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, বিশেষ করে সিজামোলিন এবং সিজামোলিনলিন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে। এটি ভালো ফ্যাট (মনোঅন্স্যাচুরেটেড এবং পলিআন্স্যাচুরেটেড ফ্যাট) সমৃদ্ধ রয়েছে, যার ফলে কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে থাকে।এগুলি অর্থাৎ সিজামোলিন ও সিজামোলিনলিন ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্ষতিকারক যে প্রভাব থেকে থাকে সেটি কমিয়ে থাকে।

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেঃ তিলের তেলে ক্যালসিয়াম সহ আরও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যার ফলে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করে থাকে। এটি হাড়ের দুর্বলতা এবং ফ্র্যাকচার বা ভাঙা কমাতে সহায্য করে থাকে। তিলের তেলে থাকা উপাদানগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে রক্তচাপের স্তর কমাতে সহায়তা করে, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহয্য করে।

পেশী ও জয়েন্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করাঃ তিলের তেলে মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম আছে। ম্যাগনেসিয়াম পেশী সঙ্কোচন এবং শিথিলতার জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান। এটি পেশীর কার্যকারিতা উন্নত করে থাকে এবং পেশীর খিঁচুনির ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। ম্যাগনেসিয়াম জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি জয়েন্টের আর্মাসিক ক্যালসিয়াম বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, যা হাড় এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

চুলে তিলের তেলের উপকারিতা

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে এর উপকারিতা গুলো বেশি। সৌন্দর্য ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য তিলের তেল একটি কার্যকরী উপাদান হতে পারে। কারণ এটি হচ্ছে চুলের উপকারি উপাদানের অনেক ভালো একটি উৎস। এই তিলের তেল চুলের উপকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায়ে ব্যবহার করা যেতে  পারে। তিলের তেল চুলে ব্যবহার করার ফলে এটি চুলে অনেক পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। যা আমাদের চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে থাকে। 

তিলের তেলে থাকা ভিটামিন E, ভিটামিন B কমপ্লেক্স, এবং মিনারেলস অর্থাৎ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং আয়রন চুলের স্ক্যাল্পে পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। এবং এই পুষ্টি উপাদানগুলো চুলের বৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া রয়েছে সেই প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া তিলের তেল চুলকে গভীরভাবে আর্দ্র করে থাকে। এবং চুলের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তিলের তেল চুলকে নরম ও মসৃণ রাখে। 

চুলে তিলের তেল ব্যবহার করার ফলে এটি চুলের শিখরকে শক্তিশালী করে থাকে। তিলের তেলের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস চুলের শিকড় শক্তিশালী করতে সহায়তা করে থাকে। এবং এটি চুলের উঠা কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহয্য করে থাকে। তিলের তেল প্রাকৃতিক তেল হওয়ার কারণে এটি বাবহারের ফলে চুলে একটি স্বাস্থ্যকর গ্লো তৈরি হয়ে থাক। এটি চুলকে উজ্জ্বল এবং চকচকে করে তোলতে অনেক সাহায্য করে।

চুলে তিলের তেলের ব্যবহারের নিয়ম

প্রথমত আমাদের তেল নির্বাচন করতে হবে অর্থাৎ তেলটির মান কেমন, সেটি উন্নত মানের ও শুদ্ধ তেল কিনা সেটি যাচাই করতে হবে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল পাওয়া যায় সেখান থেকে ভালো কোম্পানির ভালো তেলটি নিতে হবে। এই তেল ব্যবহারের সময় তেলটি হালকা করে গরম করে নিতে হবে। কারণ এটি গরম করে নিলে এটি চুলের স্ক্যাল্পে ভালোভাবে প্রবাহিত হতে পারে এবং তেল শোষণ করতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনঃ কাঁচা রসুন খাওয়ার উপকারিতা

তেলকে খুব বেশি গরম করা উচিত হবে না, শুধু উষ্ণ করে নিলেই ভালো হবে। এবং এভাবে তেল টি ব্যবহারের উপযোগী করে নিতে হবে। তিলের তেলে যেসব উপকার ও অপকার রয়েছে এর মধ্যে এর এই উপকার টি দেখতে হবে। এরপর প্রথমে তিলের তেলটি চুলের স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে হবে। এই তেল আপনার আঙ্গুলের ডগার সাহায্যে স্ক্যাল্পে মৃদুভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতেও সহায়ক হবে।

চুলের দৈর্ঘ্যে প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের যা করতে হবে তা হলো স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করার পর, চুলের দৈর্ঘ্যে এবং বিশেষ করে চুলের ডগাগুলিতে তেল ভালো ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। এটি চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং চুল ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমাবে। চুলে তেল লাগানোর পরে ১০ মিনিট থেকে ১৫ মিনিট ধরে মৃদুভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এর ফলে তেল চুলের স্ক্যাল্পে ভালোভাবে প্রবাহিত হতে পারবে এবং চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করবে। 

তেল লাগানোর পরে মাথার চারপাশে একটি গরম তোয়ালে মোড়াতে হবে। যার ফলে এটি তেলকে চুলের স্ক্যাল্পে আরও ভালোভাবে শোষণ করতে সাহায্য করে থাকবে। তিলের তেলের ব্যবহারের দিকগুলো এর মধ্যে এটিও একটি ব্যবহারের নিয়ম। এভাবে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। যদি সম্ভব হয় সেটি সারা রাত রেখে দিলে ভালো।  পরের দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে নিতে হবে। কিছু সময় একাধিক বার শ্যাম্পু ব্যবহার করে নিতে হবে যার ফলে তেলটি ভালোভাবে পরিষ্কার হবে।

ত্বকের যত্নে তিলের তেল

তিলের তেল ত্বকের জন্য খুব উপকারি ও কার্যকরী একটি উপাদান। এটি অনেক ব্যবহার করা হয়ে থাকে ত্বকের জন্য। তিলের তেলে বিদ্যমান প্রাকৃতিক ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্র করে থাকে। এই তিলের তেল ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শীতকালে, যখন ত্বক প্রায়ই শুষ্ক হয়ে থাকে, তখন তিলের তেল ত্বককে পুনরায় কোমল এবং নরম রাখতে সহায়তা করে।

তিলের তেল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বক সুস্থ ও মসৃণ হয়ে থাকে। তিলের তেলে থাকা ভিটামিন E তিলের তেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি ত্বকের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্যের চিহ্নের গতি ধীর করে থাকে। এটি নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে বলিরেখা এবং বয়সজনিত অন্যান্য সমস্যা কমিয়ে থাকে এবং ত্বককে তরুণ ও সতেজ রাখে।

আরও পড়ুনঃ তেলাপিয়া মাছ খাওয়ার উপকারিতা

তিলের তেলে যেসব উপকার ও অপকার রয়েছে এর মধ্যে উপকারি হলো তিলের তেলে ভিটামিন B কমপ্লেক্স ও ভিটামিন E সহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে যা ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায্য করে থাকে। এই তেলে থাকা এই উপাদানগুলো ত্বকের পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে, এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখেত সহায়তা করে। এটি ত্বককে শক্তিশালী করার এবং স্বাস্থ্যবান করার জন্য একটি আদর্শ প্রাকৃতিক উপাদান বলা যায়।

কালো তিলের তেলের উপকারিতা

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে কালো তিলের তেল (Nigella sativa) হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা শতাব্দী ধরে মানুষ স্বাস্থ্যকর উপকারিতার জন্য ব্যবহার করে চলে আসছে। কালো তিলের তেল বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ একটি উপাদান এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে অনেক কার্যকরী। কালো তিলের তেলে থাইমোকুইনন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব প্রদান করে থাকে।

তিলের-তেলের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

কালো তিলের তেল শরীরের ইমিউন সিস্টেম কে শক্তিশালী করে থাকে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। এটি ব্যবহারের নিয়মের মধ্যে রয়েছে এটি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চা চামচ পরিমাণ খেলে দেহে এর উপকার লক্ষ্য করা যাবে। কালো তিলের তেলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণাবলী রয়েছে যা ত্বকের প্রদাহ, অ্যালার্জি এবং পিগমেন্টেশন এর সমস্যা কমাতে সহায়তা করে থাকে।

শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সমাধানে ও সর্দি কাশি কমাতেও এই কালো তিলের তেল অনেক উপকারে আসে। কালো তিলের তেল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী প্রদান করে থাকে, যা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করে থাকে এবং সর্দি-কাশির উপশমে সহায়তা করে থাকে। এক চা চামচ পরিমাণ এই তেক গরম পানি তে মিশিয়ে পান করলে এসব সমস্যা দূর হবে। কালো তিলের তেল ব্যবহারের ফলে জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে থাকে।

তিলের তেলের ব্যবহার

তিলের তেল একটি বহুমুখী তেল যা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। তিলের তেলের ভালো ও খারাপ দিক রয়েছে। তিলের তেলের ব্যবহারের দিকগুলো যেমন- রান্নার কাজে, ত্বকে, চুলের যত্নে, এবং স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই তেলের পুষ্টি উপাদান, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলী বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত অনেক সুবিধাও প্রদান করে থাকে। এখানে তিলের তেলের বিস্তারিত ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা ও ব্যাখ্যা করা হলো।

খাবারের তালিকায় তিলের তেলঃ তিলের তেল রান্নার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত করা হয়ে থাকে। এটি তাজা ও সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয় এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি তেল।তিলের তেল রান্নার জন্য একটি ভালো পছন্দ কারণ এটি উচ্চ তাপমাত্রায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। এটি কোনো কিছু ভাজা, সেঁক, এবং স্যুপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, এবং রান্নার খাবারে সুগন্ধ বাড়ায় অর্থাৎ সুগন্ধ যুক্ত করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ কাঁচা রসুন খাওয়ার উপকারিতা

সালাদ ড্রেসিং করাতে ও জুসেঃ তিলের তেল সালাদের জন্য একটি সুস্বাদু তেল। এই তিলের তেল সালাদের ড্রেসিং হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই তেল ব্যবহারের ফলে সালাদে একটি মিষ্টি ও বাদামের মত স্বাদ যুক্ত করে থাকে এবং সালাদের পুষ্টিমান বৃদ্ধি করে থাকে। জুসে যদি এই তেল এক চা চামচ পরিমাণ মিশিয়ে দেওয়া যায় তাহলে এটি জুসের মধ্যে পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকবে। এবং দেহের পুষ্টির চাহিদা পুরন হবে।

স্বাস্থ্য সেবায়, ব্যাথা ও প্রদাহ কমাতেঃ তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে এর উপকারিতা হলো শরীরের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে থাকা উপদানের যে গুণাবলী রয়েছে তা আমদের দেহের স্বাস্থ্যের সমস্যা সমাধান করে থাকে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। এটি সকালে এক চা চামচ খালি পেটে  খেলে এই উপকারিতা পাওয়া যাবে। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলী দেহের প্রদাহ ও ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।

তিলের তেলের দাম কত?

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা বা তিলের তেলের ভালো ও খারাপ দিক গুলো দেখতে গেলে অবশ্যয় এর দামের দিকটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তিলের তেলে যেসব উপকার ও অপকার রয়েছে এর মধ্যে এর দাম টাও একটি বিষয়। তিলের তেলের দাম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এটি বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে এর দাম পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এখানে বেশ কিছু সাধারন দিক রয়েছে যা এর দাম নির্ধারণে প্রভাব ফেলে থাকে।

তিলের তেলের প্রাথমিক দামের দিক দেখতে গেলে এটি সাধারণত যে দাম দাম রয়েছে তা অনেক সময় সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তন হয়। এটি আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে দাম হচ্ছে- 

সাধারন তিলের তেলের দামঃ

  • ২০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ১০০ টাকা - ১৫০ টাকা হয়ে থাকে।
  • ৫০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ২৫০ টকা - ৪০০ টাকা হয়ে থাকে।

অর্গানিক বা এক্সট্রা ভার্জিন তিলের তেলের দামঃ

  • ২০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ২৫০ টাকা - ৪০০ টাকা হয়ে থাকে।
  • ৫০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ৬০০ টাকা - ১০০০ টাকা হয়ে থাকে।

সাধারণ কালো তিলের তেলের দামঃ

  • ২০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ২০০ টাকা - ৩৫০ টাকা হয়ে থাকে।
  • ৫০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ৫০০ টাকা - ৭০০ টাকা হয়ে থাকে।

অর্গানিক বা প্রিমিয়াম কালো তিলের তেলের দামঃ

  • ২০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ৪০০ টাকা - ৭০০ টাকা হয়ে থাকে।
  • ৫০০ মিলি বোতলের দামঃ সাধারণত ৮০০ টাকা - ১২০০ টাকা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ বিভিন্ন ধরনের পোষ্ট

তিলের তেলের দাম যেসব বিষয়ের উপর নির্ধারিত করা হয় তা হলো ব্র্যান্ডের নাম ও জনপ্রিয়তার উপর পরিবর্তন হয়ে থাকে। ব্র্যান্ডেড তেল সাধারণত একটু বেশি দামি হয়ে থাকে। এক্সট্রা ভার্জিন বা অর্গানিক তেলের দাম সাধারণত একটি বেশি হয়। তাছাড়া প্যাকেজিং এর দিকে লক্ষ্য করলে ছোট বোতলের দাম কম ও বড় বোতলের দাম বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া স্থানীয় বাজার, সুপার মার্কেট ও অনলাইন এ এর দামের ভিন্নতা থাকতে পারে।

তিলের তেলের অপকারিতা

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা বা তিলের তেলে যেসব উপকার ও অপকার রয়েছে তার মধ্যে এর উপকার নিয়ে আলোচনা করা হলেও এর অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখতে হবে। এই তিলের তেলের স্বাস্থ্য উপকারি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই তিলের তেলের অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। জেগুলো আমাদের এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যয় জেনে নেওয়া দরকার।

তিলের-তেলের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

ওজন বৃদ্ধি ও এলার্জিঃ তিলের তেল হচ্ছে উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ একটি তেল যাতে ক্যালোরি অনেকবেশি পরিমাণে থেকে থাকে। এই তেল অতিরিক্ত পরিমানের ব্যবহার করা হলে দেহে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ হয়ে যেতে পারে। যার ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। কিছু মানুষের তিলের তেলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। এতে ত্বকের র‍্যাশ, চুলকানি, বা অন্যান্য অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

পাকস্থলী ও হরমোনের সমস্যাঃ অতিরিক্ত তিলের তেল ব্যবহারের ফলে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন পেটের গ্যাস, পেটে অস্বস্তি বা ডায়রিয়াও হতে পারে। তাই এই তেল সীমিত ব্যবহার করতে হবে, অভ্যস্ত হলে এর পরিমাণ বাড়ালে সমস্যা হবে না। তিলের তেলে কিছু হরমোনাল প্রভাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যা কিছু লোকের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন পিএসডি (পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিনড্রোম) বা থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

তিলের তেল খেলে কি ক্ষতি

তিলের তেল সাধারণত অনেক উপকারি একটি তেল। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। তিলের তেলের ভালো ও খারাপ দিক রয়েছে। কিন্তু এর উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা খুব কম। তারপরও এটি বেশি পরিমাণে খেলে বা বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে এর কিছু সম্ভাব্য ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়। তিলের তেলের ব্যবহারের দিকগুলো এর মধ্যে এই দিকটিও আমাদের দেখতে হবে যে কোনো ক্ষতি হবে কিনা।

এর ক্ষতির দিক দেখতে গেলে এটি অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষের কোলেস্টেরল স্তরে এর কিছুটা প্রভাব পরতে পারে। তিলের তেল সাধারণত কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে থাকে। কিন্তু এটি অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কিছু মানুষের কেলোস্টেরল স্তরের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। এটি রোধে কেলোস্টেরল স্তরের উপর নজর রাখতে হবে এবং এটি ব্যবহারে সামঞ্জস্য করতে হবে।

তিলের তেল অতিরিক্ত ব্যবহারে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে তিলের তেল অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে যিদু এটি অতিরিক্ত লবন বা চিনি দিয়ে ব্যবহার করা হয়। এই তেল ব্যবহার করার সময় এর সাথে লবণ ও চিনি ব্যবহারের পরিমাণে সচেতন থাকতে হবে। এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

শেষকথাঃ

তিলের তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বা তিলের তেলে যেসব উপকার ও অপকার রয়েছে এর সম্পর্কে আজকের এই পোষ্টটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছি অর্থাৎ আলোচনা করেছি। আশা করি এই পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং এই পোষ্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এবং যদি কোনো ভুল থেকে থাকে অবশ্যয় ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এরকম আরও উপকারি পোষ্ট পড়তে চাইলে এই সাইটটি ফলো করতে পারেন। আপনার সুস্থতা কামনা করে আজকে এখানেই শেষ করছি, ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম এস আই 17 ব্লগ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url